1. info@www.durjoynews24.com : দূর্জয় নিউজ ২৪ :
শনিবার, ০১ এপ্রিল ২০২৩, ০২:২১ অপরাহ্ন
শিরোনাম:
ভূমি সচিব হলেন খলিলুর রহমান বাদীকে বিয়ে করে ধর্ষণ মামলা থেকে অব্যাহতি পেলেন সাবেক এমপি লক্ষ্মীপুরে স্ত্রী হত্যার দায়ে স্বামীসহ ২ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড লক্ষ্মীপুরে যথাযোগ্য মর্যাদায় মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উদযাপন লক্ষ্মীপুরে বিচার বিভাগের উদ্যোগে মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উদযাপন লক্ষ্মীপুরে রাজমহল রেস্টুরেন্ট এন্ড বিরিয়ানী হাউজ উত্তর তেমুহনী শাখার শুভ উদ্ভোধন লক্ষ্মীপুরে মানব পাচারের শিকার ব্যক্তির আইনগত অধিকার বিষয়ক সংবেদনশীলতা অধিবেশন লক্ষ্মীপুরে সন্ত্রাস দমন ও অপরাধ প্রতিরোধকেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্পের আওতায় সেমিনার চন্দ্রগঞ্জের বশিকপুরে পুলিশ সুপার ডে ও বিট পুলিশিং সভা অনুষ্ঠিত লক্ষ্মীপুরে কানের দুল আত্মসাতের জন্য শিশু হত্যা : গৃহবধূর আমৃত্যু কারাদন্ড

নড়িয়ার সুরেশ্বর পয়েন্টে মিলছে ঝাঁকে ঝাঁকে পাঙ্গাস।

  • প্রকাশিত: বুধবার, ২ ডিসেম্বর, ২০২০
  • ৩৫ বার পড়া হয়েছে

শরিয়তপুর থেকে আকতার হোসেনের প্রতিবেধন:

শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলার সুরেশ্বর পয়েন্টে পদ্মা নদীতে ঝাঁকে ঝাঁকে ধরা পড়ছে পাঙ্গাস মাছ। বিগত বছরের তুলনায় এই বছর নদীতে পাঙ্গাসের সংখ্যা অনেক বেশি।
ধরা পরা পাঙ্গাস গুলোর ওজন গড়ে ৫ থেকে ১৫ কেজি পর্যন্ত। অনেক জেলের জালে এক দিনে প্রায় ৫০-৬০ টি পর্যন্ত পাঙ্গাস মাছ পেয়েছে। উপজেলার হালইসার গ্রামের হানিফের জালে ৮ নভেম্বর ৮৬ টি পাঙ্গাস মাছ ধরা পরে। তিনি সে সব মাছ স্থানীয় আড়তে ৪ লাখ ২৫ হাজার ৭শত টাকা বিক্রি করেন।
কথা বলে জানা যায়, গত (৪ নভেম্বর) মা ইলিশ এর অভিযান শেষে ৫ নভেম্বর থেকে আজ পর্যন্ত স্থানীয় হালইসার গ্রামের ১৯টি মাছ ধরার নৌকায় ১ হাজার ২ শত ২৪টি পাঙ্গাস মাছ ধরা পরেছে। যার গড় ওজন প্রায় ৮ কেজি হারে মোট ৯ হাজার ৭ শত ৯২ কেজি। যার বাজার মুল্য ৫৩ লাখ ৮৫ হাজার ৬ শত টাকা। এছারাও আরো অনেক নৌকা প্রতিনিয়তই কমবেশি পাঙ্গাস শিকার করছে। পাশের জেলা গুলো থেকে এ পাঙ্গাস উৎসবে যোগ দিতে শত শত নৌকা সুরেস্বর এলাকায় মাছ ধরতে আসে।
সুরেশ্বর মৎস্য আড়তে গিয়ে দেখা গেছে, সারিবদ্ধ ভাবে পাঙ্গাস রেখে দিয়েছে জেলেরা। পরে সেই মাছ গুলো আড়তের মালিকরা পাইকারদের কাছে বিক্রি করছেন। এছাড়াও দাম তুলনামূলক ভাবে কম হওয়ায় দূর দুরান্ত হতে অনেক ক্রেতাও পাঙ্গাস মাছ কিনে নিয়ে যাচ্ছেন। বেশি মাছ ভাল দামে বিক্রি করতে পেরে জেলেরা দারুন খুশি।
কেন এ বছর পাঙ্গাস মাছ বেশি পাওয়া যাচ্ছে এ প্রশ্নের উত্তরে, ওয়ার্ল্ডফিশ বাংলাদেশের ইকোফিশ-২ প্রকল্পের ড. মো.আব্দুল ওয়াহাব বলেন, এই মাছ বেশি পাওয়া যাচ্ছে, যার পিছনে তো অবশ্যই কিছু কারণ রয়েছে। সরকারের মৎস্য বিভাগ, মৎস্য গবেষনা ইনস্টিটিউট ও ইকোফিশ প্রকল্প নদী ও তার উপর নির্ভরশীল মৎস্যজীবিদের নিয়ে বিভিন্ন ধরণের কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে। ২০১৯ সালে মৎস্য অফিস, আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য ও মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট সহ ছোট পাঙ্গাস শিকারের ফাঁদ (চাই) ধ্বংস করা সহ প্রস্তুতকারীদের সচেতন করে বিকল্প কর্মসংস্থানের আশ্বাস প্রদান করা হয়। যার ফলে ছোট পাঙ্গাস গুলো মরণ ফাঁদ থেকে রক্ষা পেয়েছে আবার অন্যদিকে মা ইলিশ ও জাটকা সংরক্ষণ সফলতার কারণে নদীতে অবাধে বিচরণ সহ বিভিন্ন প্রজাতির ছোট ছোট জলজ প্রাণী ও অন্যান্য খাবার খেয়ে দ্রুত বড় হওয়ার সুযোগ পেয়েছে। সর্ব্বোপরি জাটকা ও মা ইলিশ রক্ষা ও নদীর জীববৈচিত্র সংরক্ষণে মৎস্য জীবিসহ বিভিন্ন শ্রেণী পেশার উপকারভোগীদের নিয়ে সহ-ব্যবস্থাপনা কার্যক্রম পরিচালনা করা, মৎস্য জীবিদের সচেতনতা বৃদ্ধি, বিভিন্ন আয় বর্ধনমুলক কার্যক্রমে উদ্ভুদ্ধ করা এবং বিশেষ করে নদীতে চাই দিয়ে মাছ না ধরা, অবৈধ জাল ব্যবহার থেকে বিরত থাকা এবং অন্যান্য স্টোক হোল্ডারদের সহযোগিতায় ছোট মাছ ধরা থেকে বিরত রাখতে পারায় বিলুপ্ত প্রায় এ পাঙ্গাস, বাঘাইর, রিটা, আইর সহ বিভিন্ন প্রজাতির বড় মাছ জেলেদের জালে ধরা পড়ছে ঝাকে ঝাকে। এবং তা এক উৎসবে রূপ নিয়েছে। এতে করে জেলেরা ছোট ফাসের জাল রেখে বড় মাছ ধরার জন্য বড় ফাসের জাল ব্যবহারে উদ্ভুদ্ধ হচ্ছে।
যদি এ প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখা যায় তাহলে নদীর জীববৈচিত্র রক্ষা ও হারিয়ে যাওয়া বিভিন্ন প্রজাতির মাছ পুনরায় পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
মুজিববর্ষ উপলক্ষে সরকার দুটি জেলে পল্লীকে মৎস্য গ্রাম ঘোষনা দিয়েছে। তার একটি হলো শরীয়তপুর নড়িয়া উপজেলার ঘড়িসার ইউনিয়নের হালইসার গ্রাম। এ গ্রামটিতে সরকারের মৎস্য বিভাগ সহ ইকোফিশ প্রকল্প বিভিন্ন ধরণের সহায়তা দিয়ে একটা আদর্শ জেলে পল্লীতে রুপান্তরিত করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। মৎস্যজীবিদের প্রশিক্ষণ সহ বিকল্প কর্মসংস্থানের জন্য গরু, ছাগল, মুরগী, সবজী বীজ, সেলাই মেশিন, পুকুরে মাছ চাষের ব্যবস্থা, মাছের খাবার তৈরীর মেশিন, বরফ কল, ডিপ টিউবেল, স্যানেটারী ল্যাট্রিন, যুবকদের টেকনিক্যাল ট্রেনিং ও জেলে বধূদের আর্থিক সহায়তা দিয়ে সঞ্চয়ী দল গঠনের কার্যক্রম হাতে নিয়েছে। এখানে উল্লেখ্য যে, উক্ত সমিতি হতে যারা ঋণ গ্রহণ করে তাদের সার্ভিস চার্জ তাদেরই থেকে যায় এবং নদীতে অভিযান কালীন সময়ে কিস্তির টাকা বন্ধ থাকে। তাতে অনেকেই কিস্তি পরিশোধের জন্য আইন ভঙ্গ করার মত অপরাধ থেকে বিরত থাকে।
হালইসার মৎস্য গ্রামের মৎস্যজীবী দাদন সর্দার বলেন, মা ইলিশ ও জাটকার মত যদি পাঙ্গাস সহ দেশীয় মাছ সংরক্ষণের দিকে বিভিন্ন দাতা সংস্থা সহ সরকারের মৎস্য বিভাগ নজর দেয় তাহলে ভবিষ্যতে পাঙ্গাস সহ দেশীয় মাছের উৎপাদন আরো বাড়বে। মানুষ সহজে অল্প দামে দেশীয় মাছের অভাব পুরণ করার মাধ্যমে পুষ্টি সহ দেশের অর্থনীতিতে অবদান রাখতে পারবে।
নড়িয়া উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোঃ আমিনুল হক বলেন, সরকারের নানাবিধ কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণের কারণে দেশে ইলিশের উৎপাদন ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। ইলিশ উৎপাদনে বাংলাদেশ এখন বিশ্বের শীর্ষে। ইলিশের বছরজুড়ে প্রাপ্যতা ও গড় ওজন বৃদ্ধি পেয়েছে। বিগত কয়েক বছরে ইলিশের পাশাপাশি দেশের আভ্যন্তরিণ উন্মুক্ত জলাশয়ে বিশেষ করে পদ্মা, মেঘনা ও এর শাখা-প্রশাখায় ক্যাটফিশ জাতীয় মাছ (পাঙ্গাস, বোয়াল, আইড়, বাঘাইড়, রিটা, পাবদা, গুলশা, টেংরা, ঘাউরা, শিং ইত্যাদি) এর পোনা ও বড় আকারের মাছ প্রচুর পরিমাণে পাওয়া যাচ্ছে। একশ্রেণীর অসাধু ও লোভী জেলে কর্তৃক ক্ষতিকর ও অবৈধ জাল/আহরণ সামগ্রী ( যেমন-বাধা জাল, মশারি জাল, কারেন্ট জাল, বড়শি জাল, বেহুন্দি জাল, ভেশাল, চর ঘেরা জাল, চায়না চাই, পাঙ্গাস চাই, বাঁধ, ঠগা, গড়া, কাঠা, জাগ ইত্যাদি) দ্বারা এসব মাছের রেণু ও পোনা নির্বিচারে ধ্বংস করছে। এসব মাছের প্রজনন মৌসুম চিহ্নিত করে নিরাপদ প্রজনন ও বেড়ে ওঠা সুযোগ দিলে ইলিশের মত ব্যাপক মৎস্য উৎপাদনের পাশাপাশি বিদেশে রপ্তানী করে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচিত হবে।
বিগত বছরগুলোতে দেশের ইলিশ সম্পদ সংরক্ষণ ও উন্নয়নে মৎস্য অধিদপ্তর এর ভূমিকা অনস্বীকার্য। পাশাপাশি আভ্যন্তরীণ উন্মুক্ত জলাশয়ের অন্যান্য ক্যাটফিশ সংরক্ষণ, উন্নয়ন ও টেকসই উৎপাদনে মৎস্য অধিদপ্তরের সাক্ষমতা বৃদ্ধি ও বিদ্যমান মৎস্য সুরক্ষা ও সংরক্ষণ আইন ১৯৫০ যুগোপযোগীকরণ সময়ের দাবী।

সংবাদটি শেয়ার করুন

আরো খবর

পুরাতন সংবাদ পড়ুন

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১১২১৩১৪১৫১৬
১৭১৮১৯২০২১২২২৩
২৪২৫২৬২৭২৮২৯৩০
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
প্রযুক্তি সহায়তায়: নাজমুল রনি